সর্বশেষ

সরকারবিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব বিএনপির

প্রকাশ :


২৪খবর বিডি: 'সরকারবিরোধী বৃহৎ জাতীয় ঐক্য গঠনে বিএনপির তৎপরতা আবারও দৃশ্যমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠন, বিশিষ্টজনের সঙ্গেও বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ভয়াবহ বন্যা এবং ঈদের কারণে এ প্রক্রিয়া অনেকটা থমকে ছিল। এবার তা জোরেশোরে শুরু করতে চাইছে বিএনপির হাইকমান্ড। সব দল ও মতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জোট গঠনের রূপরেখা তৈরি করতে চায় দলটি।'

-দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা সব দলকে নিয়ে আন্দোলনে যেতে চান। সেটা যুগপৎ আন্দোলন। ওই আন্দোলন কর্মসূচির জন্য সব দল ও মতের সঙ্গে মিল রেখে রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে সংবিধান, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় আঙ্গিকে সংস্কারের অঙ্গীকার থাকবে। জাতীয় সরকারের রূপরেখা তৈরি করতে এরই মধ্যে দলের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক নেতা কাজ শুরু করেছেন। খসড়া রূপরেখা নিয়ে ফের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠনসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। প্রতিটি দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে তাদের মতামত নিয়ে চুলচেরা বিশ্নেষণ করা হবে। কোনো দলের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করা হবে। এরপর রূপরেখা ও কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।

'বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ২৪খবর বিডিকে বলেন, বৃহত্তর ঐক্য গঠন প্রক্রিয়া চলমান। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত থাকবেই। আলোচনার টেবিলে এসব মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়েই ঐক্য গঠন করা হবে।'

বিএনপি সূত্র বলছে, তাদের ঐক্য প্রক্রিয়ার সংলাপে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোও থাকবে। আরও থাকবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ইসলামী দলগুলোও। রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে যেমন সংলাপ হবে, তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলেও এখন কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এমন কয়েকটি দল যেমন- জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এবং শরিফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদের একাংশের সঙ্গেও আলোচনার চেষ্টা করা হবে। এর পর বিএনপির নীতিনির্ধারণী বৈঠকে ঐক্যের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে আন্দোলনরত দলগুলোর মধ্যে বড় দল থেকেই সরকারপ্রধান হবেন বলে একটা ধারণা এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী সব দলকে নিয়েই নির্বাচন-পরবর্তী জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়েও স্পষ্ট করা হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়েও রূপরেখায় স্পষ্ট করা হবে।

-বিএনপি নেতারা আরও জানান, 'খালেদা জিয়াই হবেন তাঁদের ঐক্যের মূল নেতা। তাঁর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগপৎ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করবেন। এ বছরের শুরুতে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। এ জন্য গত ২৪ মে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে দলটি। প্রথম দিন নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৭ মে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ৩১ মে গণসংহতি আন্দোল, ১ জুন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ২ জুন কল্যাণ পার্টি, ৭ জুন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ৮ জুন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ৯ জুন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ১২ জুন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ভাসানী (ন্যাপ ভাসানী) এবং ১৬ জুন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ (এলডিপি) বেশ কিছু দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাঁরা পৃথক বৈঠক করেছেন।'

-যদিও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বিএনপির ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও অনেকটা ধোঁয়াশায় আছেন। কবে নাগাদ এই ঐক্য বাস্তবে রূপ দিতে পারবে, তা নিয়েও অনেকের সন্দেহ রয়েছে। তাঁরা বৃহত্তর ঐক্য গঠনের রূপরেখা সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট জানতে চান এবং দৃশ্যমান উদ্যোগও দেখতে চান। এসব নেতা জানান, কোন দাবিতে জোট গঠন করা হবে, প্রধান ইস্যু কী, আন্দোলনের প্রধান নেতা কে হবেন, আন্দোলনে সফলতা এলে কী হবে, নতুন সরকার এলে গুণগত কী পরিবর্তন আসবে- এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার দরকার আছে। জোটের শরিক দলগুলোর অবস্থান কোথায় হবে, তাও স্পষ্ট করার দরকার আছে।

সরকারবিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব বিএনপির

'নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে তাঁর দলসহ আরও অনেক দলেরই বৈঠক হয়েছে। তবে বন্যার কারণে হয়তো কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, অল্প সময়ের মধ্যে এটার বাস্তব রূপ দেখতে পাব। তিনি বলেন, আমরা আগে এই সরকারের পতন চাই। সেটা ভিন্ন মঞ্চ, যুগপৎ কিংবা ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম যে নামেই হোক না কেন, আগে পতন নিশ্চিত করতে হবে। এরপর আমরা আলোচনা করে ঠিক করব- কোন পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। এখন যদি এই সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সবাই যার যার মতো করে মতামত দিতে থাকি, তাহলে ঐক্য প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে, বাধাগ্রস্ত হবে।'

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত